এসটি নিউজ: চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধে চীনের প্রতি জাতীয় সংসদে সরকারকে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করার দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দরা।
বৃহস্পতিবার ৫ জুলাই রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এর সামনে চীনের জিংজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দরা
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এই দাবি জানান ।
সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশ আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হাজী মো: শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু। বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশের পক্ষে হাজী মো: নজরুল ইসলাম, মো: গোলাম কিবরিয়া সাত্তার, কাজী সালাহউদ্দিন প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন সচেতন নাগরিক সমাজ বাংলাদেশের মো: কবির হোসেন রাজু,মো: নুরুল ইসলাম, মো: রুহুল আমিন মাষ্টার, ফারুক আকন,মো: ইদ্রিস আলী, নুর মোহাম্মদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশাজীবির মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৫ই জুলাই ২০০৯ চীনের জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমচিতে চীনা সরকারের হামলায় ১৯৭ জন নিহত ও এক হাজার ৭২১ জন আহত হন। এরপর উইঘুর পরিচালিত মসজিদগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ৪০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়। তাদের ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বক্তারা আরও বলেন, ১৯৩০ সাল থেকে ৯৩ বছর ধরে উইঘুর মুসলিমদেরকে জাতিগত বিনাস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নির্যাতন করে আসছে। বর্তমানে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামে কারাগার তৈরি করে প্রায় পনের লাখ উইঘুর মুসলিমকে আটক করে রাখা হয়েছে। বক্তারা এই নির্যাতন বন্ধ করে কারাবন্দি উইঘুর মুসলিমদের মুক্তির দাবি জানান। তারা অবিলম্বে চীনের হাতে আটক দশ লাখ উইঘুর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেওয়ার জোড় দাবি জানান। তারা উইঘুরদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরি করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের যে আগ্রাসন ও গণহত্যা চলছে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করে ঠিক তেমনিভাবে চীনের প্রতিও বাংলাদেশ সরকার জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করে সেই দাবি জানান বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন,গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার নামে উইঘুর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালোনো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দিন। ২০০৯ সালে চীন দেশের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম হত্যাযজ্ঞ চালায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী। সেই থেকে আজও সেখানে মুসলিম হত্যা নির্যাতন লেগেই আছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় গণহত্যা চালানো হয়।উইঘুর মুসলমান সন্তানদের তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কৌশলে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাত না ঘটালে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের জরায়ুতে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ডিভাইস প্রতিস্থাপনের আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অনেকের অপারেশনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হচ্ছে।