প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া। কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।
ঢাকায় কাঁচা কোনো বস্তি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, রিকশাচালক ও দিনমজুররাও যাতে ফ্ল্যাটে থাকতে পারে, সে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
রাজধানীর বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণি বিতান, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইস গেট পর্যন্ত আট সারির বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি (ইনার সার্কুলার রিং রোড), ধানমন্ডি হ্রদে নজরুল সরোবর এবং শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণকাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবাজারে সকালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সুইচ টিপে প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষের কল্যাণের লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীর জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যে রকম ভাড়া, সে রকম ভাড়াই দেবে, কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে।
‘শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া। কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।
পরিবেশ রক্ষার গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের এক টুকরো জমি আছে, তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে, সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে, সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাদসিকের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের যুবসমাজ লেখাপড়া করে কাজ পায় না। সেখানে আমরা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছি। যারা কম্পিউটার শিখবে, ডিজিটাল সিস্টেম শিখবে, তারা ছাড়াও অন্য সকলে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে। কোম্পানির আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি যাতে কোম্পানি খুলতে পারে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।
‘একটা কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি, যে ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে আমাদের তরুণরা অন্তত দুই লাখ টাকা নিতে পারে। এককভাবে বা কয়েকজনের মিলে যাতে বিভিন্ন ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন।’
পাস করে চাকরির সন্ধানে না ছোটার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজেই নিজের বস হবেন। নিজের চাকরি দেবেন, নিজে উদ্যোক্তা হবেন, নিজের চাকরি দিতে পারবেন। সেভাবে তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে। তার জন্য ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে
সারা বাংলাদেশে আমরা কম্পিউটার ট্রেনিং এবং ইনকিউবেটর সেন্টার করে দিচ্ছি। স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি। ট্রেনিংয়ের সাথে সাথে সব ধরনের সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। শুধু দেশে নয়, বিদেশে কাজ করতে গেলেও উপযুক্ত ট্রেনিং নিয়ে যাওয়া ভালো। দালাল ধরে টাকা খরচ করে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরার চেয়ে নিজের দেশে থেকে কাজ করা অনেক লাভবান। এ ব্যাপারে মানুষকে একটু উজ্জীবিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে লেখাপড়া করতে হবে। মাদক, নেশা, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। একটা মাদকাসক্ত সন্তান যদি থাকে তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। তোমরা বাবা-মাকে কষ্ট দাও কেন? নিজেকে কষ্ট দাও কেন
‘যারা মাদক সেবন করে তারা পরবর্তীতে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে যায়। নিজেদের ঘর-সংসার হয় না, কিছু হয় না। জনগণকে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।